-->

মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ প্রহসনের সমাজচিত্র

6 minute read

 

সমাজকে বাদ দিয়ে সাহিত্য হয় না। একেই কি বলে সভ্যতাএকটি সামাজিক প্রহসন। কাজেই সমাজের সঙ্গে এর যোগ যে অত্যন্ত গভীর, সেকথা সহজেই বোঝা যায় । আর, এই কারণেই সমকালীন সমাজের একটি নিখুঁত প্রতিচ্ছবি প্রহসনটির প্রেক্ষাপটে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে ।

‘মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক যুগের অবসানে তখন আমাদের দেশে আধুনিক ধনবাদীযুগের সূচনা হয়েছে। কিন্তু, এই যুগপরিবর্তন এদেশে স্বাভাবিক নিয়মে ঘটেনি। এরই ফলস্বরূপ দেখা যায় যুগান্তর সাধিত হলেও, এদেশে পূর্ব যুগের সমস্ত লক্ষণ নিঃশেষ হয়ে গেল না; আবার নতুন যুগের সমস্ত লক্ষণকেও আমাদের পক্ষে আয়ত্ত করা সহজ হয়ে উঠল না। উত্তর যুগের দো-টানার পড়ে আমাদের চিত্তলোকেও যে একটা দোলাচলবৃত্তি জেগে উঠেছিল, তারও সুন্দর একটা পরিচর এই প্রহসনে মেলে।

পৃথিবীর উন্নত ধনবাদী দেশগুলোতে দেখা যায়, সেখানে যুগান্তর সৃষ্টি হয়েছে শ্রেণী-সংঘর্ষ এবং যন্ত্রসভ্যতাকে ভিত্তি করে। ফলে সে-সব দেশে জমির মালিক এবং কৃষিজীবী মানুষেরা রূপান্তরিত হয়েছে যথাক্রমে কলকারখানার বিত্তশালী মালিক এবং শ্রমিক শ্রেণীতে। সৃষ্টি হয়েছে উন্নত শহর-সভ্যতার । কিন্তু এখানকার চিত্র ভিন্ন। এখানে অর্থকৌলীন্যবশত মুষ্টিমেয় মানুষ ইংরেজি-শিক্ষার সুযোগ লাভ করে ক্রমশ চাকুরিজীবীতে পরিণত হয় এবং তারা গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসতে থাকে। এইভাবেই সৃষ্টি হয় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। পরিপূর্ণভাবে চাকুরিজীবীতে পরিণত হতে এদের অবশ্য সময় লেগেছিল। সেই মধ্যবর্তী সময়টুকুতে এদের আয়ের প্রধান উৎসই ছিল গ্রামের জমিজমা। কাজেই মধ্যযুগীয় একান্নবর্তী পরিবারগুলো আরও কিছুদিন স্থায়িত্বলাভ করেছিল।

আলোচ্য প্রহসনের নায়ক নবকুমারকেও আমরা একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যস্বরূপেই দেখতে পাই। শহরে তার বাস। চাকরি-বাকরি তাকে করতে হয় না। অথচ, বন্ধুদের স্ফূর্তির জন্যে মনি ম্যাটারেতাদের যথেষ্ট সাহায্য করতেও তার ক্লাস্তি নেই । সংসারের যিনি কর্তা, তাঁকেও চাকরি-বাকরি করতে দেখা যায় না । কিন্তু তীর্থে তীর্থে ভ্রমণ করে বেড়াবার মত আৰ্থিক-সংগতি তাঁর আছে। আবার, দাস-দাসী রেখে রাজার হালে সংসার চালাবার অর্থ যোগাতেও তিনি সমর্থ। জমি-জমাসূত্রে গ্রামীণ আয়ের উৎস না থাকলে এরকম জীবনযাপন সম্ভবপর নয়। এই দিক থেকে বিচার করলে তাঁদের উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীরই অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। এ দের পাশাপাশি হোটেলের মুটিয়া, গৃহভৃত্য, বাজনদার ইত্যাদিদের নিম্নবিত্তবা শ্রমজীবীসম্প্রদায়ের অঙ্গীভূত করতে হবে। এদের বিভিন্ন সংলাপে নিজেদের দারিদ্র্য-ক্লিষ্ট জীবনের দীর্ঘ-শ্বাসটুকুও সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে। এরা সুসংগঠিত নয়, শিক্ষার আলোকও পায়নি। কাজেই এরা নিজেদের এই দুর্দশার প্রকৃত কারণটুকু জানে না। তাই কেউ মনে করে এই হেঁদু বেটারাই দুনিয়াদারির মজা করে ন্যেলে”; আবার কেউ বাবুদের উচ্ছিষ্ট মদে কিংবা এক ছিলিম গাঁজার চেষ্টায় বুঁদ হয়ে অবক্ষয়ের যন্ত্রণাটুকু ভোলবার সহজ পথ খোঁজে ।

উনিশ শতকের প্রথম ভাগ থেকেই পাশ্চাত্য শিক্ষার সংস্পর্শে এসে এদেশের নবীন যুবকদের মধ্যে একটা মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাদের উদ্দেশ্য তারা জ্ঞানচর্চার মধ্যে দিয়ে যুক্তিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, চিরাচরিত প্রথার অবসান ঘটাতে চায় । কারণ তারা মনে করে এসব না হলে কুসংস্কারের বোঝা দূর করা যাবে না ; আর কুসংস্কার দূর না হলে সমাজসংস্কারও অসম্ভব। নারীশিক্ষার প্রবর্তন, স্ত্রীস্বাধীনতা আনয়ন, বিধবাবিবাহের প্রচলন, জাতিভেদ দূরীকরণ ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে তারা সমাজসংস্কারেও প্রয়াসী।

কিন্তু এই সব মহৎ ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপদান করতে গেলে যে অটুট মনোবল ও চরিত্রবলের প্রয়োজন, তাদের অধিকাংশেরই তা নেই। আর তাই এসব সদিচ্ছা তাদের কাছে হয় হুজুগের সামগ্রীতে, নয় কথার কথাতে অনায়াসেই পরিণত হয়ে যায় । কথায় ও কাজে সৃষ্টি হয় দুস্তর ব্যবধান । ফলে যে নৈতিক অবক্ষয়ের তারা সম্মুখীন হয় তাতে তাদের ঐসব বড় বড় বাগাড়ম্বরের আড়ালে মদ্যপান, বারাঙ্গনা সেবা ইত্যাদি কুৎসিত আচরণ করতে বাধে না । জ্ঞানতরঙ্গিণী সভায় নবকুমারের বক্তৃত। এবং সদস্যদের আচার-আচরণকে লক্ষ্য করলেই এ-সত্য আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

কর্তামশায়ের ধর্মীয় নিষ্ঠা, গিন্নিমায়ের রক্ষণশীলতা ইত্যাদি একদিকে রয়েছে ; অপর দিকে আছে নবকুমার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ। তারা পুরোনো যা-কিছু তাকেই নির্বিচারে আক্রমণ করে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে চাইছে। তাদের কাছে হিন্দুধর্মটাই যেন রক্ষণশীলতার প্রতীক। প্রসঙ্গত আমাদের ডিরোজিও-শিষ্যদের পরিচালিত “Athenium” পত্রিকায় হিন্দুধর্ম সম্পর্কে মাধবচন্দ্র মল্লিক নামে জনৈক ছাত্রের লেখা “If there is any thing that we hate from that bottom of our heart, it is Hinduism.”—উক্তিটির কথা মনে পড়ে যাবে । তাই তারা বাবুর্চির হাতের রান্না নিষিদ্ধ মাংস খেতে এত উৎসুক। নিজেদের ধর্মগ্রন্থের নামটুকু মনে রাখাও তারা অনাবশ্যক মনে করে।  তাই হঠাৎ যখন সে সবের নামোল্লেখ করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তারা ঠিকমত তা না পারে স্মরণ করতে, না পারে উচ্চারণ করতে। কর্তার কাছে কালীনাথ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাগীতগোবিন্দের নামটুকু উল্লেখ করতে গিয়ে কেমন বিপাকে পড়েছিল, তা আমাদের জানা আছে।

নবীন-প্রবীণদের দৃষ্টিভঙ্গীর সংঘর্ষজাত এই মানসিক অস্থিরতার হাত থেকে পরবর্তী কালে অবশ্য তাদের অনেকখানি রক্ষা করে ব্রাহ্মসমাজ । রামমোহন রায় ১৮২৮ খ্রীস্টাব্দে এটির প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু দুবছর পর তাঁর ইংলণ্ড গমনের পর এটি দুর্বল হয়ে পড়ে । মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের নেতৃত্বে ১৮৪৩ খ্রীস্টাব্দে এর পুনরুত্থান ঘটলেও, ১৮৬০-৭০ খ্রীস্টাব্দই এর গৌরবময় যুগ । সুতরাং দেখা যাচ্ছে ১৮৭৯ খ্রীস্টাব্দে অর্থাৎ প্রহসনটি রচনার সমকালে, ব্রাহ্মসমাজের আবার অভ্যুত্থান ঘটছে। তাই প্রসনটির শেষাংশে দেখা যায়, প্রসন্ন দাদা কোথায় গেছে জানতে চাওয়ার গিন্নিমা তাকে ঐ যে রামমোহন রায়—নাকার কি সভা আছেবলে জানিয়েছেন।

ব্রাহ্মসমাজের অভ্যূত্থান ঘটলেও যুবমানসে তার প্রতিষ্ঠালাভে আরো কিছু সময় লেগেছিল । কাজেই সংযমের সাধনার মধ্যে চরিত্রবল এবং মনোবল আহরণ নয়, বিদেশীদের অন্ধ অনুকরণের মধ্যে দিয়ে তারা মুশকিল আসানের সহজ রাস্তা খোঁজে। সাগর পারের সমাজ আর আমাদের সমাজের রীতিনীতির দুস্তর পার্থক্যের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে তাই তারা বোনের গালেই চুমো খেতে চায়, আর বাঈনাচকে বল নাচবলে উল্লেখ করে। নবকুমারের আচরণ এ-প্রসঙ্গে আমাদের মনে পড়ে যাবে । ভাই-বোনের সম্পর্কগত উক্ত দৃষ্টান্তের কথা তুলে কেউ কেউ মধুসুদনের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জনের অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু শিবনাথ শাস্ত্রী তার রামতনু লাহিডী বিষয়ক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন : তখন শহুরে বৃন্দাবন ঘোষাল নামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ ছিল।......সে বলিয়া বেড়াইত যে, ডিরোজিও ছেলেদিগকে বলেন, ঈশ্বর নাই, ধর্মাধর্ম নাই, পিতামাতাকে মান্য করা অবশ্য কর্তব্য নয়, ভাই বোনে বিবাহ হওয়াতে দোষ নাই......ইত্যাদি ইত্যাদি।হতে পারে এ রটনামাত্র। কিন্তু কোনো রটন। কি সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন হতে পারে ? মনে প্রশ্ন জাগে ।

যাই হক, অনুকরণে এরা এতই অন্ধ হয়ে উঠেছিল যে, আর্শিতে নিজমুখটুকু দেখবার অবকাশও যেন এদের হত না ! তাই কথায় ও কাজে বিস্তর ব্যবধান সৃষ্টি করে হিপোক্র্যাসির চূড়ান্ত করে ছাড়লেও, বৈষ্ণব-বাবাজীর কাজে এই ধরনের অসংগতি দেখা দেওয়া মাত্রেই তাকে এদের শালা কি ছিপক্রীটবলে গাল দিতে বাধে না। কথায়-বার্তায় এরা এত বিদেশী ও দেশী গালিগালাজের প্রয়োগ করে যে এদের রুচিবান্ শিক্ষিত বলতে আমাদের সংকোচ হয় ৷ এদের জেহাদ শুধু নিজের ধর্মের বিরুদ্ধেই নয়, মাতৃভাষাকে নেটিভের ভাষা মনে করে এরা নিশ্চয় তাকে অবজ্ঞাও করে। তাই তাদের ভাষায় ওল্ড ফুল’, ‘মরাল করেজ’, ‘সুপরষ্টিসনইত্যাদি বিদেশী কথার এত ছড়াছড়ি ! বাংলা বাক্যের গঠনও অধিকাংশ সময় ইংরেজি ঢঙে করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে কালীনাথের বাক্য এর সুন্দর দৃষ্টান্ত। এর মধ্যেও আদৌ কোনো অতিরঞ্জন নেই । সেকাল ও একালগ্রন্থে রাজনারায়ণ বসু এদের এই ধরনের বাক্যপ্রয়োগের সুন্দর একটা দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। যেমন : আমার father yesterday কিছু unwell হওয়াতে doctor কে call করা গেল, তিনি একটি physic দিলেন ইত্যাদি । এর পাশাপাশি সেকালে, কর্তাদের মতো, সনাতনপন্থী-দের ভাষায় তৎসম শব্দের বাহুল্য লক্ষ্য করা যেত; আর ইংরেজি-অনভিজ্ঞ এদেশীয়দের সঙ্গে বাক্যালাপে বিদেশীরা যে যথাসম্ভব ভাঙা হিন্দি বা বিকৃত বাংলা শব্দ ব্যবহার করত, তার পরিচয় সার্জেন্টের সংলাপে পাওয়া যায় ৷ ইয়ং বেঙ্গলশ্রেণীর কালাপাহাড়ী মনোভাবের সঙ্গে সংঘাতে সে-সময় আমাদের সনাতন জীবনধারার অন্তর্ভুক্ত বন্ধুত্ব, কর্তব্যবোধ, পিতার প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রীতি, কর্মনৈপুণ্য, শ্রমশীলতা ইত্যাদি মানবিক সদগুণাবলীর অবসান ঘটতে থাকে। অথচ, নতুন মূল্যবোধের আবির্ভাব তখনও হয়নি। তাই দেখা যায় নবকুমারের অনুপস্থিতিতে তার বন্ধুরা তারই নিন্দায় পঞ্চমুখঅথচ এত স্ফূর্তির ফোয়ারা কার দৌলতে ছুটছে, তা তারা একবারও ভেবে দেখছে না। নবকুমার কালীনাথের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বাবাকে প্রতারণা করছে; কিংবা এক জায়গায় বলছে : ড্যাম কত্তা—ওল্‌ড ফুল আর কদ্দিন বাঁচবে ?” – অথচ এসব করতে বা বলতে তার এতটুকুও সংকোচ হচ্ছে না। বোঝা যাচ্ছে তাসখেলা আর গল্পগুজবে মত্ত হয়ে কলিকালের গিন্নিমার কথায় মেয়েরা কেমন কুড়ের সদ্দারহয়ে পড়েছে বা তাদের কর্মকুশলতা নষ্ট হয়েছে । এসবের মধ্যে দিয়ে দাস-দাসী সমন্বিত অবস্থাপন্ন গৃহস্থের অন্তঃপুরের ছবিটিও প্রত্যক্ষ হয়ে উঠেছে।

সেই ভাঙন-ধরা সমাজে রক্ষক ভক্ষকের ভূমিকা গ্রহণ করেছে। পুলিস-প্রহরীরা নিরীহ মানুষকে ভয় দেখিয়ে ঘুষ আদায় করেযা তাদের অযোগ্যতারও পরিচায়ক। এদেরই শিকার হয়েছে বৈষ্ণব বাবাজী। অবশ্য সে-ও ধোয়া তুলসীপাতা নয়, বরং জলজ্যান্ত একটি তুলসীবনের বাঘ! বাইরে মালা জপ করলেও বারাঙ্গনাদের দিকে লোলুপ নয়নে তাকাতে তার বাধা নেই। আবার নবকুমার উৎকোচের লোভ দেখালে অতি সহজেই সে তার বশীভূত হয়ে মিথ্যাচারে স্বীকৃত হয়েছে। কর্তার মতো স্বধর্মনিষ্ঠ আদর্শ বৈষ্ণবের পাশাপাশি এইরকম ভণ্ড, ভেকধারী, অনাচারী বৈষ্ণবেরও সে-সমাজে অভাব ছিলনা ।

ভাঙন-ধরা সমাজে দূষিত ক্ষতের মতোই সৃষ্ট হয় বারাঙ্গনা-পল্লী। এখানেও আমরা বেলফুল আর বরফ-ফেরির মধ্যে দিয়ে তা যেন প্রত্যক্ষ দেখতে পাই ।

সমাজের এই সামগ্রিক অবক্ষয় মধ্যে বাংলার ঘরে ঘরে যে-সব স্নেহান্ধ আশঙ্কাতুরা জননীদের দেখা যায়, দুর্ভাগ্যহতা জায়ারা দীর্ঘশ্বাস ফেলেনএখানে গিন্নিমা এবং হরকামিনী যথাক্রমে যেন তাঁদেরই প্রতিনিধি । তোর ভাতার তো তোকে একবার মনেও করে না” – প্রসন্নর প্রতি হরকামিনীর সমবেদনাসূচক এই উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সেই সমাজে অনেক নারীকেই স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে অভিশপ্ত জীবনের গ্লানিকে বহন করে চলতে হত। এর পাশাপাশি আবার ঝগড়া, পরচর্চা, তামাশা দেখা, সামান্য আদিরসাত্মক রসিকতা সহযোগে যে নারীসমাজ মূর্ত হয়ে ওঠেতাও সেই সমাজেরই একটা অচ্ছেদ্য অঙ্গ। স্ত্রীশিক্ষার তখন বিশেষ প্রসার না হওয়ায় ঝগড়া, পরচর্চা, তাসখেলা প্রভৃতির মধ্যে দিয়েই তাই সাধারণত তাদের দিন কাটাতে হত ।

আলোচ্য প্রহসনের পরিধি সীমিত। সমাজের এই এতগুলি দিককে চিত্রিত করবার তাগিদ কোনো প্রহসনকারেরই থাকতে পারে না। তবুও মধুসুদন দক্ষ শিল্পীর তুলির সামান্য আঁচড়ের মতো এসব যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, তা আমাদেয় শুধু বিস্ময়েরই উদ্রেক করে না, তাঁর উচ্চস্তরের শিল্পপ্রতিভারও সাক্ষ্য দেয়।